হোম আন্তর্জাতিক আল-জাজিরার সাংবাদিক হত্যার নতুন ভিডিও থেকে যা জানা যাচ্ছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক :

আল-জাজিরার সাংবাদিক শিরিন আবু আকলেহ হত্যার নতুন একটি ভিডিও সামনে এসেছে। নতুন এই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, হত্যার আগে ঘটনাস্থলের পরিস্থিতি অপেক্ষাকৃত শান্ত ছিল। কোনো সংঘাতের ঘটনা ঘটেনি। যেমনটা দাবি করেছিল ইসরাইল।

গত ১১ মে অধিকৃত পশ্চিম তীরের জেনিন শহরে এক ইসরাইলি সেনার গুলিতে নিহত হন আল-জাজিরার নারী সাংবাদিক শিরিন আবু আকলেহ। ওইদিন জেনিনে ইসরাইলি বাহিনীর একটি সামরিক অভিযানের সংবাদ সংগ্রহ করছিলেন তিনি। ইসরাইলি কর্মকর্তাদের দাবি, শিরিন হত্যার মুহূর্তে ওই এলাকায় সংঘাত চলছিল।

তবে ওই সময় ধারণ করা নতুন একটি ভিডিও ক্লিপে ভিন্ন তথ্য সামনে আসছে। বৃহস্পতিবার (১৯ মে) বিবিসির মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক করোরেস্পন্ডেন্ট টম বাতেম্যান ভিডিও ক্লিপটি প্রকাশ করেন। ভিডিওটি শিরিন আবু আকলেহর হত্যার সময়কার বলে নিশ্চিত করেছে আল-জাজিরা।

ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, শুরুর দিকে সংঘাত বা লড়াইয়ের লেশমাত্র নেই। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরাও এমনটাই বর্ণনা করেছিলেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য, সাংবাদিক শিরিনকে গুলি করার সময় ইসরাইলি বাহিনী ও ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের মধ্যে সংঘর্ষের কোনো ঘটনাই ঘটেনি।

ভিডিওর শুরুর দিকেই একাধিক ব্যক্তির কথা শোনা যায়। তারা অনেকটা হেসেহেসেই কথা বলছিলেন। এ সময় ভিডিওতে সাংবাদিক শিরিন ও তার সহকর্মীদের দেখা যায়। তাদের পরনে ‘প্রেস’ লেখা নীল রঙের ভেস্ট ছিল।

ঘটনাস্থলের যে দিকটায় ইসরাইলি সেনারা ছিল, সাংবাদিক শিরিন ও তার সহকর্মীদের আস্তে আস্তে সেদিকে এগিয়ে আসতে দেখা যায়। এর কয়েক সেকেন্ড পরই গুলির শব্দ শুরু হয়। প্রত্যক্ষদর্শী ও ঘটনাস্থলে থাকা অন্য সাংবাদিকরা জানান, ইসরাইলের এক সেনা মাথায় গুলি করলে শিরিন প্রাণ হারান।

গুলি শুরু হলে লোকগুলো পালাতে শুরু করে। এ সময় একজনকে উচ্চৈঃস্বরে বেশ কয়েকবার সাংবাদিক শিরিনের নাম ধরে ডাকতে শোনা যায়। একটু পরই রাস্তায় উপুড় হয়ে পড়ে থাকতে দেখা যায় শিরিনকে।

ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক শিরিন আবু আকলেহর হত্যাকাণ্ডে বিশ্বজুড়ে সমালোচনার ঝড় বইছে। যুক্তরাষ্ট্র ও জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এ হত্যাকাণ্ডের স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে।

এদিকে প্রথমদিকে হত্যাকাণ্ডের তদন্ত করা হবে বললেও ইসরাইল এখন বলছে, এ হত্যাকাণ্ড তদন্ত করার কোনো পরিকল্পনা তাদের নেই।

বৃহস্পতিবার (১৯ মে) ইসরাইলের সংবাদপত্র হারেৎজ এক প্রতিবেদনে জানায়, ইসরাইলের সামরিক পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) মনে করছে, ইসরাইলের সেনাদের সন্দেহভাজন হিসেবে ধরে কোনো একটি তদন্ত হলে ইসরাইলি সমাজের ভেতরে তা বিভাজন সৃষ্টি করবে।

হত্যাকাণ্ড তদন্ত নিয়ে ইসরাইলের এ বক্তব্য শোনার পর সাংবাদিক শিরিনের পরিবার বলেছে, ইসরাইলি সেনাবাহিনীর শিরিন হত্যাকাণ্ড তদন্ত না করার খবরে তারা অবাক হয়নি।

পরিবারের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ইসরাইলের দিক থেকে এমন খবর প্রত্যাশিতই ছিল। এ জন্যই আমরা চাইনি শিরিন হত্যাকাণ্ড তদন্তের অংশ হোক ইসরাইল। আমরা চাই, এর জন্য যারা দায়ী, তাদের জবাবদিহি ও বিচারের আওতায় আনা হোক।’

 

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন