বাণিজ্য ডেস্ক:
গ্রাহকদের টাকা আত্মসাতের দায়ে অভিযুক্ত বিতর্কিত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান আলেশা মার্টের চেয়ারম্যান মঞ্জুর আলম সিকদারের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই দাবি করে বাংলাদেশ ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেছেন, প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে কোনো সম্পর্ক প্রমাণ করতে পারলে তিনি চাকরি ছেড়ে দেবেন।
মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে ‘ই-কমার্স ও ই-সেবা খাতে ভোক্তার অধিকার, আমাদের করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, একটি সংবাদমাধ্যমে আলেশা মার্টের চেয়ারম্যানের সঙ্গে আমাকে জড়িয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে সংবাদমাধ্যমটির প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে সফিকুজ্জামান বলেন, আলেশা মার্টের চেয়ারম্যানের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই। যদি কেউ সম্পর্ক প্রমাণ করতে পারে তবে চাকরি ছেড়ে দেব।
এছাড়া ই কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রাসেলের সঙ্গে তাকে নিয়ে একই গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদেরও তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান ভোক্তার ডিজি। তিনি বলেন, এ ধরনের সাংবাদিকতা হলুদ সাংবাদিকতা। এই ধরনের সংবাদ সম্পূর্ণ মিথ্যা। এর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সিআইডিতে গিয়ে আলেশা মার্টের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলার উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল উল্লেখ করে সফিকুজ্জামান আরও বলেন, গ্রাহকদের টাকা আত্মসাতে অভিযুক্ত অন্যান্য ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তিনি যোগাযোগ রক্ষা করছিলেন, যেন গ্রাহকরা তাদের টাকা ফেরত পান। এর অংশ হিসেবে আলেশা মার্টের চেয়ারম্যান মঞ্জুর আলম সিকদারের সঙ্গে কথা হয়েছিল। তবে এক পর্যায়ে মঞ্জুর আলম সিকদার যোগাযোগ বন্ধ করে দিলে ও ফোন ধরা বন্ধ করে দিলে উদ্যোগী হয়ে সিআইডিতে গিয়ে আলেশা মার্টের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছি। যে মামলায় তিনি গ্রেফতারও হয়েছিলেন।
ভোক্তার ডিজি আরও বলেন, এই ধরনের নেতিবাচক সাংবাদিকতা বন্ধ না হলে ভোক্তা অধিকার রক্ষায় দেশজুড়ে তাদের কার্যক্রম মুখ থুবড়ে পড়বে। এ ব্যাপারে দেশের সব সংবাদমাধ্যমের সাংবাদিকদের সহযোগিতা প্রয়োজন।
মহাপরিচালক জানান, দেশে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের নামে গ্রাহকদের টাকা আত্মসাতের একের পর এক ঘটনা যখন ঘটছিলো, সে রকম এক অস্থির সময়ে ভোক্তা অধিকারের মহাপরিচালকের দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলাম। এর পর থেকে ভোক্তাদের অধিকার রক্ষায় নানা উদ্যোগ নিয়েছি। এর অংশ হিসেবে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর নামে গ্রাহকদের আত্মসাত করা টাকা ফিরিয়ে আনতে ভোক্তা অধিকার কর্তৃপক্ষ কাজ করে যাচ্ছে।
এরই মধ্যে বিভিন্ন ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানে গ্রাহকদের পাওনা ৩৮০ কোটি টাকা ফেরত দেয়া হয়েছে জানিয়ে সফিকুজ্জামান বলেন, এর মধ্যে কিউ কমের গ্রাহকদের ৩০৮ কোটি টাকার পাশাপাশি ইভ্যালির গ্রাহকদেরও ১০ কোটি টাকা ফেরত দেয়া হয়েছে। অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোও যেন গ্রাহকদের টাকা সঠিকভাবে ফেরত দেয় সেই উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের পরিচালক গাজী গোলাম তৌসিফ প্রমুখ।