হোম অর্থ ও বাণিজ্য আইএমএফ, বেপরোয়া ডলার বিশ্ব অর্থনীতির মাথাব্যথার কারণ

বাণিজ্য ডেস্ক :

অন্যান্য প্রধান মুদ্রার বিপরীতে মার্কিন ডলারের বিনিময় হার রেকর্ড উচ্চতা ছুঁয়েছে। বিভিন্ন দেশের মুদ্রার বিনিয়ম হার ডলারের বিপরীতে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ায় সেসব দেশ তাদের মুদ্রার অবমূল্যায়ন রুখতে নানামুখী পদক্ষেপ নিচ্ছে। কিন্তু বিশ্বব্যাপী চলমান মুদ্রাস্ফীতির বিরুদ্ধে লড়াইকে আরও কঠিন করে তুলেছে মার্কিন মুদ্রার এ ঊর্ধ্বগতি। এ কথাই জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)।

রাশিয়ার রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত সংবাদমাধ্যম আরটি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বলেছে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ যখন ক্রমবর্ধমাণ মুদ্রাস্ফীতি কমাতে লড়াই করছে, সেখানে মার্কিন ডলারের তুলনায় দেশগুলোর মুদ্রার অবমূল্যায়ন হওয়া সেই লড়াইকে আরও কঠিন করে তুলেছে।

শুক্রবার (১৪ অক্টোবর) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে আইএমএফ এসব কথা বলেছে। পাশাপাশি ঊর্ধ্বমুখী ডলারের বিপরীতে দেশগুলো কী কী পদক্ষেপ নিতে পারে সে বিষয়েও বিশদ ব্যাখ্যা করা হয়েছে।

প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ করা হয়, ২০০০ সালের পর থেকে মার্কিন মুদ্রা সর্বোচ্চ পর্যায়ে অবস্থান করছে। এ বছরের শুরু থেকে ডলারের বিপরীতে জাপানি ইয়েন ২২ শতাংশ, ইউরো ১৩ শতাংশ এবং অন্যান্য উদীয়মান বাজারের মুদ্রা ৬ শতাংশ পর্যন্ত অবমূল্যায়ন হয়েছে।

সংস্থাটি বলছে, ‘আন্তর্জাতিক বাণিজ্য এবং অর্থায়নে ডলারের একক আধিপত্যের কারণে, গেল কয়েক মাসের মধ্যে ডলারের এ রকম তীক্ষ্ণ ঊর্ধ্বগতি বিশ্বের প্রায় সব দেশের ওপর একটি বিশাল সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রভাব ফেলেছে।’

আইএমএফ জানিয়েছে, ২০০০ সালের পর থেকে বিশ্বে পণ্য রফতানিতে মার্কিন শেয়ার ১২ শতাংশ থেকে কমে ৮ শতাংশে নেমেছে। তবে এখনও রফতানি বাজারে ডলারের আধিপত্য ৪০ শতাংশে রয়েছে।

প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, ‘ডলারের উচ্চ বিনিময় হারের কারণে বিশ্ববাজার চাপের মুখে পড়েছে। বিশেষ করে উদীয়মান বাজারগুলোতে এর প্রভাব তীব্র। এসব উদীয়মান বাজারগুলো উচ্চ আমদানি নির্ভরতা এবং ডলার নির্ভর আমদানির কারণে উন্নত অর্থনীতির সঙ্গে টিকে থাকতে পারছে না।’

প্রতিবেদন অনুসারে, সব আন্তর্দেশীয় ঋণ এবং আন্তর্জাতিক ঋণ সিকিউরিটির প্রায় অর্ধেক মার্কিন ডলারের মাধ্যমে হয়ে থাকে। যদিও উদীয়মান বাজারের সরকারগুলো তাদের নিজস্ব মুদ্রায় ঋণ দেয়ার ক্ষেত্রে অগ্রগতি করেছে, তাদের প্রাইভেট কর্পোরেট খাত এখনও উচ্চস্তরের ডলারনির্ভর ঋণ নিচ্ছে।

সংস্থাটি বলছে, বিশ্বে সুদের হার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অনেক দেশের আর্থিক অবস্থা ব্যাপক চাপের সম্মুখীন হয়েছে। এর মধ্যে ডলারের উচ্চমূল্য সেই চাপে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। বিশেষ করে উদীয়মান বাজার এবং নিম্নআয়ের দেশগুলোর জন্য এটি একটি বাড়তি সংকট, কেননা এ দেশগুলো ইতোমধ্যে ঋণ সংকটের উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন