বাণিজ্য ডেস্ক :
প্রায় দুই সপ্তাহ অস্থিরতার পর অবশেষে চালের দামের লাগামহীন গতি থেমেছে। বাড়তি দামে বিক্রি হলেও খুচরা-পাইকারি বিক্রেতারা বলছেন, সরকারি তৎপরতা বাড়ালে বাজার দরও কমবে। এদিকে অভিযানে নেমে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর বলছে, পাইকারি ও মিল মালিকদের যোগসাজশেই অস্থিতিশীল হয়ে ওঠে চালের বাজার।
প্রায় দুই সপ্তাহ অস্থিতিশীল থাকার পর দুদিন ধরে শান্ত চালের বাজার। এমনটাই দাবি করে কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, এখনো বাড়তি দামেই চাল বিক্রি হচ্ছে। তবে চাল সরবরাহে মিল-মোকাম আর কোম্পানিগুলো এখন ইতিবাচক।
চালের বাজারের ঊর্ধ্বগতি থামার বিষয়ে একজন চাল ব্যবসায়ী বলেন, চালের বাজারে যে অস্থির অবস্থা ছিল, এখন তা নেই। দু-তিন দিন ধরে মোটামুটি স্থির অবস্থায় রয়েছে।
তবে দাম বেশি উল্লেখ করে আরেকজন ব্যবসায়ী বলেন, সরকারের অভিযানের পর বাজারে চাল আসছে। কিন্তু দাম কমছে না। আগের দামেই চাল আসছে। নতুন চালানে যদি চালের দাম কমে, তাহলে আমরা দাম কমাব। আর যদি বাড়ে, তাহলে বাড়াব।
এদিকে সরকারের কঠোর পদক্ষেপই চালের দাম কমানো সম্ভব বলে জানিয়ে একজন বিক্রেতা বলেন, সরকার যদি ভালোভাবে পদক্ষেপ নেয়, তাহলে চালের দাম কমানো সম্ভব। কেননা, দেশে পর্যাপ্ত পরিমাণ ধান ও চাল রয়েছে।
অপরদিকে মোহাম্মদপুর পাইকারি কৃষি মার্কেটে গেল দুদিনে চালের সরবরাহ চার গুণ পর্যন্ত বেড়েছে। সেই সঙ্গে থেমেছে দাম বৃদ্ধির পাগলা ঘোড়াও।
চালের সরবরাহ বাড়ার বিষয়ে একজন পাইকারি ব্যবসায়ী বলেন, মিলারদের কাছে যে পরিমাণ চাল আটকে ছিল, সেগুলো তারা ধীরে ধীরে দেয়া শুরু করেছেন। এ জন্য ৩-৪ দিন আগে বাজারে যে পরিমাণ চাল ছিল, বর্তমানে তার দ্বিগুণ বা চার গুণ চাল বাজারে রয়েছে।
দাম বাড়ার প্রবণতা কমলেও চালের দাম এখনো অনেক বেশি মন্তব্য করে এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘প্রতিদিন ফোন করলেই তারা বলত বস্তায় ১০০ টাকা বাড়তি বা দেড়শ টাকা বাড়তি বা ২০০ বাড়তি। সে বাড়তিটা বর্তমানে থেমেছে। থামার পরও নতুন মৌসুম হিসেবে বাজারে চালের দাম অনেক বেশি।’
এদিকে কারসাজির হোতা খুঁজতে শুক্রবার (৩ জুন) মোহাম্মদপুর পাইকারি কৃষি মার্কেটে অভিযান চালায় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর। এ সময় দোকান রেখে সরে পড়েন অনেক বিক্রেতা। আবার কেউ কেউ তর্কেও জড়ান।
অভিযান শেষে জানানো হয়, যোগসাজশে দাম বৃদ্ধির প্রমাণ মিলেছে। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের উপপরিচালক বিকাশ চন্দ্র দাস বলেন, মিল পর্যায়ে তদারকি করেছি। পাশাপাশি বাজারেও তদারকি করেছি। দুই জায়গা ক্রস চেক করে আমরা যোগসাজশে প্রমাণ পেয়েছি। উভয় পক্ষে মিলে মূল্য বাড়িয়েছে। এ জন্য আমরা ৩টি প্রতিষ্ঠানকে আজ ১ লাখ ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেছি।
এদিন শ্যামলীসহ রাজধানীর ৬টি এলাকায় অভিযান চালিয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের ৬টি তদারকি দল।