হোম অন্যান্যসারাদেশ ‘অপেক্ষায় থাকতে থাকতে রাত ৩টা, তবুও মেলে না গ্যাস’

‘অপেক্ষায় থাকতে থাকতে রাত ৩টা, তবুও মেলে না গ্যাস’

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 86 ভিউজ

অনলাইন ডেস্ক:

রাজধানীতে তীব্র আকার ধারণ করেছে গ্যাস সংকট। বিপাকে পড়েছেন বাসাবাড়ি, শিল্প-কারখানা, সিএনজিচালিত অটোরিকশাসহ সব শ্রেণির গ্রাহক। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত নিম্ন আয়ের মানুষ। সিলিন্ডার কেনাসহ বিকল্প উপায়ে রান্না করায় বাড়ছে ব্যয়। জ্বালানি বিভাগ বলছে, সংকট সামলাতে স্বল্পমেয়াদের পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদী কিছু পরিকল্পনাও নেয়া হয়েছে।

গৃহকর্মীর কাজ করেন বিউটি আক্তার। রাজধানীর কাঁঠালবাগানের এই বাসিন্দার ঘরে সংযোগ থাকলেও নেই চুলায় গ্যাস। বাধ্য হয়ে পলিথিন, কাগজ কিংবা লাকড়ি পুড়িয়ে সারছেন রান্নার কাজ।

তিনি বলেন, সকালে গ্যাস থাকেই না। অপেক্ষায় থাকতে থাকতে রাত ২টা কিংবা ৩টা বেজে যায়। এরপরও ঠিকমতো গ্যাসের চাপ থাকে না।

বিউটির প্রতিবেশী এক নারী বলেন, গ্যাস সারাদিনই থাকে না। রাত ২টায় এলেও চাপ কম থাকে। আবার ভোর সাড়ে ৪টায় চলে যায়।

আরেক নারী বলেন, ঘরে ছোট ছোট বাচ্চা এবং অসুস্থ শাশুড়ি রয়েছে। তাদের সময় মতো খাবার দেয়া লাগে। স্বামীর যে ইনকাম, তা দিয়ে সিলিন্ডার গ্যাস কেনা দায়। কিন্তু এরপরও বাধ্য হয়ে সিলিন্ডার গ্যাস কিনতে হচ্ছে।

এতে গেলো নিম্ন আয়ের মানুষের কথা। ভালো নেই উচ্চবিত্ত কিংবা মধ্যবিত্তরাও। গ্যাসের অভাব নানামুখী সংকটে ফেলে দিয়েছে তাদেরও।

ফ্ল্যাট বাসার কয়েকজন জানান, রাত ১২টায় কোনোরকম গ্যাস এলেও কাজে লাগে না। আমরা ঘুমিয়ে পড়ি। কিন্তু ভোরে ঘুম থেকে উঠে দেখি গ্যাসের চাপ চলে যায়। এতে অনেক ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। সারাক্ষণ গ্যাসের সরবরাহের দাবি জানিয়েছেন তারা।

এদিকে ঘরের মতো সিএনজি ফিলিং স্টেশনে নেই গ্যাসের চাপ। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষার পরও মিলছে না গ্যাস।

গাড়ি চালকরা জানান, সব জায়গায় গ্যাসের সমস্যা হচ্ছে। কোথাও গ্যাসের প্রেশার ১২০ আবার কোথাও ১৫০ থাকছে। দীর্ঘ সারিতে দাঁড়িয়ে গ্যাস নিতে হয়।

সচিবালয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, সংকটের পেছনে নাজুক পাইপলাইন, শীতের কারণে গ্যাস জমে গেছে। এছাড়া দুই এলএনজি টার্মিনালের মধ্যে একটি রক্ষণাবেক্ষণে পাঠানোয় গ্যাস কম। এতে ৩৫ শতাংশের বেশি গ্যাস ঘাটতি নিয়ে চলছে দেশের জ্বালানি খাত।

আশ্বাস দিয়ে তিনি বলেন, আমরা নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহের একটি টাইমলাইন ঠিক করে ফেলেছি। ২০২৬ সালের মধ্যে বাংলাদেশে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ থাকবে।

বর্তমানে ২০ শতাংশ গ্যাস বিদেশ থেকে আমদানি করা হয় উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা নিজস্ব উৎস থেকে ৮০ শতাংশ গ্যাস ব্যবহার করছি। আমরা গ্যাস আমদানি খুব একটা বাড়াতে চাই না। আমাদের গ্যাস আমদানি অব্যাহত থাকবে। মাঝখানে যে গ্যাপটা থাকবে আমরা সেই গ্যাপটা আমদানি করা গ্যাস দিয়ে পূরণ করতে চাই।

নসরুল হামিদ বলেন, ভোলায় গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে। একই সঙ্গে নতুন নতুন এলাকায়ও গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া পরবর্তী সময়ে যদি গভীর সমুদ্রে গ্যাস পাওয়া যায়, তাহলে আমরা মনে করি, জ্বালানি বিভাগ একটি ভালো অবস্থায় থাকবে। মনে হচ্ছে, আমরা সুখবর পাচ্ছি, এটিই হচ্ছে বড় বিষয়।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন