জাতীয় ডেস্ক:
দীর্ঘদিন ধরে অচল হয়ে পড়ে রয়েছে এক লাখেরও বেশি ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম)। যা প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকায় কেনা হয়েছিল। এছাড়া সচল ৪০ হাজার ইভিএমের ভবিষ্যৎ নিয়েও সন্দিহান নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এরজন্য মাঠ পর্যায়ের অব্যবস্থাপনাকে দায়ী করছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেড়শ আসনে ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল। তবে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ইভিএমের অভাবে তা করতে পারেনি নির্বাচন কমিশন। ফলে ব্যালট পেপারে হয়েছে ভোট। তবে ৯ মার্চ ইভিএমেই হতে যাচ্ছে সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, জেলা পরিষদের সাধারণ ও উপনির্বাচন। এ অবস্থায় প্রশ্ন ওঠে এসব নির্বাচনেও কী ইভিএমে ভোটগ্রহণ সম্ভব হবে? কিন্তু অচল ইভিএম সচলের কোনো পরিকল্পনার কথা জানাতে পারেনি ইসি।
জানা যায়, ২০১৮ সালে ৩ হাজার ৮২৫ কোটি ২৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ইভিএমের একটি প্রকল্প হাতে নেয় নির্বাচন কমিশন। কেনা হয় দেড় লাখ ইভিএম। যেখানে প্রতিটি ইভিএম কিনতে খরচ হয় ২ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। ইভিএমগুলোর জীবনকাল কমপক্ষে ১০ বছর বলা হলেও পাঁচ বছরের মাথায় নষ্ট অবস্থায় পড়ে রয়েছে বেশিরভাগ যন্ত্র। এভাবে চলতে থাকলে সচলগুলোও যেকোনো সময় অকেজো হয়ে পড়তে পারে।
সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ করা গেলে বেশিরভাগ ইভিএম সচল করা সম্ভব বলে জানিয়েছেন ইভিএমের প্রকল্প পরিচালক কর্নেল সৈয়দ রাকিবুল হাসান। মাঠ পর্যায়ের সঠিক ব্যবস্থাপনার অভাবে ইভিএমের এ অবস্থা বলে জানান তিনি।
পরিচালক বলেন, ‘ইভিএম রক্ষণাবেক্ষণে পাঁচ বছরের মধ্যে কোনো জনবল তৈরি হয়নি। ফলে এগুলো রক্ষণাবেক্ষণ করা সম্ভব হয়নি। বাংলাদেশ মেশিন টুলস কারখানার সঙ্গে সমন্বয় করলে অবশ্যই মেরামতের মাধ্যমে ৮০ থেকে ৯২ শতাংশ অচল ইভিএম সচল করা সম্ভব হবে।’
ইভিএমের ভবিষ্যৎ ও রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে জানতে চাইলে আশার কথা শোনাতে পারেননি নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর।
তিনি বলেন, যেসব ইভিএম অকেজো পড়ে রয়েছে, এগুলো ঠিক করতে অনেক টাকার প্রয়োজন। তবে ইভিএমগুলো নিয়ে কী করা হবে এ ধরনের আলোচনা এখনও হয়নি। এ নিয়ে আমাদের চিন্তা-ভাবনাও আপাতত নাই।
অপরদিকে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, জেলা পরিষদের সাধারণ ও উপনির্বাচনে কী পরিমাণ ইভিএম ব্যবহার করা যাবে সে বিষয়েও নির্দিষ্ট কোনো তথ্য দিতে পারেনি নির্বাচন কমিশন।