হোম অন্যান্যসারাদেশ স্থায়ী বেড়ি বাঁধের অভাবে বিপদে মোংলার ১০ গ্রামের মানুষ

স্থায়ী বেড়ি বাঁধের অভাবে বিপদে মোংলার ১০ গ্রামের মানুষ

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 140 ভিউজ

মোংলা প্রতিনিধি :

মোংলা সুন্দরবনের বুকচিরে বঙ্গোপসাগর মিশেছে মোংলা ও পশুর নদী। এ নদীটি উজানে ছুয়েছে একপাড়ে বাগেরহাটের মোংলা উপজেলা। আর অপর পাড়ে খুলনার দাকোপ উপজেলার অবস্থান। পশুর নদী ছাড়াও বনের আরেক প্রান্ত হতে বয়ে আসা শাখা নদী শ্যালা ও মোংলা-ঘষিয়াখালী নদী প্রাকৃতিক ভাবে ঘিরে রেখেছে মোংলার জনপদ। এ উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের মধ্যে চিলা, চাঁদপাই ও বুড়িরডাঙ্গা ইউনিয়ন ছুঁয়ে গেছে ওই তিনটি নদী। আর এসব ইউনিয়নের অন্তত ১০ টি গ্রাম প্রতিনিয়ন জোয়ারের পানিতে ডুবছে। স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশের ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। উন্নয়ন ও জনগণের জান মালের নিরাপত্তার জন্য উপকূলীয় জনপথে বেড়িবাঁধ নির্মাণ করেছে সরকার। কিন্তু নদীর সংলগ্ন হওয়া স্বত্বেও মোংলার কোন জায়গাতেই সরকারীভাবে বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হয়নি।

একটি বেসরকারি সংস্থা প্রায় একযুগ আগে দেড় কোটি টাকা ব্যায় পৌর শহরের সীমান্ত থেকে সুন্দরবন সংলগ্ন লোকালয়ের জয়মনির ঘোল পর্যন্ত আংশিক বেড়িবাধ নির্মাণ করে। বিশেষ করে চাঁদপাই ইউনিয়নের কানাইনগর আবাসন এলাকা থেকে শুরু করে জয়মনির ঘোল শ্যালার নদীর মোহনা পর্যন্ত বেড়িবাধের অবস্থা এখন বড়ই করুণ। কাইননগর থেকে চিলা খাল পযন্ত যে বাধ নির্মাণ করা হয়েছিল এখন সেই বাঁধের চিহ্নও নেই। কোথায় কোথায় বাঁধের সীমা রেখা একহাত কিংবা একবিলাস্তের মতো টিকে আছে। এ অবস্থায় পশুর নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষের দুঃখ দূর্দশার যেন শেষ নেই । স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, একের পর এক ঝড়-জলোচ্ছাস আর নদীর স্রোত, কুল ভাঙ্গা গড়ার খেলায় এ জনপদের বাসিন্দারা এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। বছরের পর বছর ধরে বেড়িবাঁধ না থাকার দূর্ভোগ চললেও জেলা, উপজেলা কিংবা পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষের কার্যকর কোন পদক্ষেপ নেই। ফলে প্রতি বছর বর্ষা আর ঝড় জলোচ্ছাসের মৌসুমে পশুর নদীর পেটে বিলিন হচ্ছে বসতভিটা ও জনবসতি। লবণ পানি প্রবেশ করে ঘের ও পুকুর ভেসে কোটি কোটি টাকার মাছ ভেসে যায়।

সামুদ্রিক ঘুর্নিঝড় সিড়র,আইলা, ফণি, বুলবুল পরবর্তী সর্বশেষ ছোবল হানা ঘুর্নিঝড় আম্পান এ জনপদের মানুষকে নিঃস্ব করেছে। উপজেলার কানাইনগরের বাসিন্দা ভ্যান চালক মোঃ হাবিবুর রহমান, জেলে আঃ রহিম, মোখলেছুর রহমানসহ একাধিক ভূক্তভোগি ব্যক্তিরা জানান, ‘পশুর নদীর জোয়ারের প্লাবনে ত্রাণ চাইনা, মাথা গোজার ঠাই ও জনবসতি রক্ষায় টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মানের দাবি জানাই’। চাঁদপাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোল্লা মোঃ তরিকুল ইসলাম বলেন, জলোচ্ছ¡াস এবং দুর্যোগের সময় এখানে ব্যাপকভাবে ঘর বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

স্থায়ীভাবে এখানে যদি কিছু না করা হয় নদী ভাংগন থেতে এলাকা রক্ষা করা যাবে না। কাজেই এখানে স্থায়ী বেড়িবাঁধ একান্ত প্রয়োজন। এ প্রসঙ্গে মোংলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার কমলেশে মজুমদার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, পশুর নদীর তীরবর্তী মানুষের নিরাপত্তায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে কানাই নগর থেকে বড় একটি বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনার রয়েছে। আশা করি আগামি বছর নাগাদ এ বেড়ি বাঁধ নির্মাণ কাজ শুরু হবে। বাগেরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ নাহিদুজ্জামান খাঁন বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, বাগেরহাট জেলার সুন্দরবন সংলগ্ন মোংলার জয়মনির ঘোল থেকে রামপাল ও মোডেলগঞ্জের সন্ন্যাসী পর্যন্ত ৯৫ কিলেমিটার বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। এ প্রকল্প গৃহীত হলে লবণ পানি প্রতিরোধ সহ কৃষকরা উপকৃত হবেন।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন