যশোর অফিস:
যশোর রেজিস্ট্রি অফিসের মহাফেজ খানার রেকর্ড কিপার ভৈরব চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে আগামীকাল মঙ্গলবার তদন্ত হবে। ইতিমধ্যে এই তদন্ত নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। রেজিস্ট্রি অফিসের সাথে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মহাফেজ খানার দায়িত্বপ্রাপ্ত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মহাদুর্নীতিবাজ ইমরুল হাসানকে স্বপদে বহাল রেখে এই তদন্ত কখনো সুষ্ঠু ও ন্যায় হবে না। এছাড়া তার রুমেই কিভাবে এই তদন্ত করা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তারা। মহাফেজ খানা থেকে রেকর্ড কিপারের মাধ্যমে সাব রেজিস্ট্রার ইমরুল হাসান লাখ লাখ টাকা অবৈধভাবে আদায় করেছেন। ফলে এই তদন্ত রেজিস্ট্রি অফিসের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এক প্রকার রক্ষারই কৌশল মাত্র।
সূত্র জানায়, জেলা রেজিস্ট্রার অফিসের মহাফেজ খানার রেকর্ড কিপার ভৈরব চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে ১০টি অভিযোগ তোলা হয়েছে। অভিযোগগুলো হলো, বেআইনি ও অনৈতিকভাবে সদর মহাফেজ খানা বন্ধ রাখা, আর্থিক অনিয়ম, জন হয়রাণি, গুরুতর অসদাচারণ, স্বেচ্ছাচারিতা, সরকারি রাজস্ব আদায়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি, নোটিশ ছাড়াই রেকর্ড বন্ধ রাখা, নকল সরবরাহ না করা, গ্রাহকদের সম্মানহানি করা এবং ২৬/০৭/২০২৩ থেকে ৩১/০৭/২০২৩ তারিখ পর্যন্ত কোন প্রকার নোটিশ ছাড়াই অর্থাৎ উধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতিত সদর রেকর্ড রুমের নকল সরবরাহ ও তল্লাশী কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়।
পত্রে আরো বলা হয়, জনবান্ধব অফিস ব্যবস্থপনা ক্ষেত্রে যেমন প্রতিবন্ধক, তেমনি নিরন্ত্রর সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে চরম স্বেচ্ছাচারিতার সামিল। এহেন শৃঙ্খলা পরিপন্থি, স্বেচ্ছাচারি কর্মকান্ড এবং অসদাচারণের বিষযে আগামীকাল মঙ্গলবার ৩ অক্টোবর সকাল ১০ টায় সদর সাব রেজিস্ট্রিার অফিসে তদন্ত হবে। সাব রেজিস্ট্রার ইমরুল হাসানের অফিসে এই তদন্ত নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। অনেকেই সুষ্ঠু তদন্ত নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন। তারা বলছেন, রেকর্ড শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইমরুল হাসান। ভৈরবের মত তিনিও একই দোষে দুষি। ফলে ইমরুল হাসানের রক্ষার জন্য তার সমমর্যাদার একজন সব রেজিস্ট্রারকে দিয়ে এই তদন্ত কখনোই সুষ্ঠু হবে এটা কেউই মানতে পারছে না।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে তারা বলছেন, সদরের সাব রেজিস্ট্রার ইমরুল হাসানকে মহাফেজ খানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দায়িত্ব দেওয়ার পর এখানে অনিয়ম-দুর্নীতির মহাউৎসব শুরু হয়। ঘুষের বিনিময়ে রেকর্ড রুমে ভূতুড়ে ঘটনার নজির বিহীন। ভৈরব চক্রবর্তীকে দিয়ে সাব রেজিস্ট্রার ইমরুল হাসান ভলিউমে ঘষামাজা, দলিলে দাগ ফেলা বা পাতা হারানোর ঘটনা অহরহ ঘটনা ঘটেয়েছে। এমনকি বড় অঙ্কের লেনদেন হলে পুরো ভলিউম গায়েব করে দেওয়া হয়েছে। আর এ থেকে দুর্নীতিবাজ ইমরুল হাসান লাখ লাখ টাকা অবৈধভাবে আয় করেছেন। বছর জুড়ে ভলিয়ম বইয়ের পাতা ছেড়া, ছবি পাল্টিয়ে জাল সই দেওয়া, রেজিস্ট্রি করা দলিলের মধ্যের অংশবিশেষ পাল্টিয়ে সুবিধামতো পাতা লাগিয়ে ভুয়া দাগ ও খতিয়ান লিখে রাখা, মূল দলিল ফেরত না দিয়ে হয়রানি করাসহ রেজিস্ট্রার অফিসের এমন নানা অনিয়ম-দুর্নীতি ঘটনায় সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে। এসব অহরহ ঘটনা ঘটলেও সাব রেজিস্ট্রার ইমরুল হাসান সব সময়ই ধরা ছোয়ার বাইরে থেকে যান।
তদন্ত সুষ্ঠু হবে কিনা জানার জন্য তদন্ত কর্মকর্তা নারায়ণ ম-লকে কয়েকবার ফোন করা হলে তার ব্যস্ত পাওয়া যায়। দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করার পরও তিনি কোন সাড়া দেননি।