বেনাপোল অফিসঃ
সাম্প্রতিক সময়ে দেশের একমাত্র বৃহত্তম স্থল বন্দর বেলাপোলে ভারতীয় ফল ও কাঁচামাল আমদানির ক্ষেত্রে ব্যাপক অনিয়মের অভযোগ উঠেছে। কিছু অসাধু বন্দর, কাস্টমস ও সিএন্ডএফ এজেন্ট পরস্পর যোগসাজসে এই শুল্ক ফাঁকির কাজে জড়িয়ে পড়েছে। এমনকি বন্দরের স্কেলে কখনও কখনও কারসাজি করার অভিযোগ রয়েছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়,সরকারের চলমান দূর্নিতি বিরোধী অভিযান বেনাপোল বন্দরে অকার্যকর। গুটি কয়েক সিএন্ডএফ এজেন্ট অসাধু কাস্টমস কর্মকর্তা পরস্পর যোগসাজসে দিনের পর দিন শুল্ক ফাঁকি দিয়ে চলেছে। সন্ধ্যার পর এসব আমদানিজাত পণ্যবাহী ভারতীয় ট্রাক বেনাপোল বন্দরে ঢুকানো হয়। এরপর পরীক্ষনের দায়িত্বে নিয়োজিত সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা, রাজস্ব কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট সিএন্ডএফ এজেন্ট কূট কৌশলে শুল্ক ফাঁকির কাজে জড়িয়ে পড়ে। উদাহরণ সরূপ বলা যায়, ভারতীয় এক ট্রাকে আনারের বহন ক্ষমতা নয়’শ থেকে সাড়ে নয়’শ ক্যারেট। যার নিট ওজন হয় ২০ টনের অধিক। কাস্টমস এর বিধান অনুযায়ী প্রতি ক্যারেটের ওজন ২.৮ কেজি থেকে ২.৯ কেজি বাদ দিয়ে নিট পণ্যের ওজন নির্ধারণ করা হয়। এরপর নিট পন্যের উপর শুল্ক নির্ধারিত হয়। কিন্তু বেনাপোল বন্দরে এই বিধি বিধান অচল। অসাধু কাস্টমস কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট সিএন্ডএফ এজেন্ট আর্থিক সুবিধার লোভে প্রতিটি খালি ক্যারেটের ওজন ৩.৫ কেজি (টিআর) নির্ধারন করে থাকে। এ ছাড়াও বাস্তবে এক ট্রাকে যদি নয়’শ ক্যারেট পণ্য থাকে পরীক্ষনের সময় কাগজে কলমে দেখানো হয় প্রায় উনিশস’শ ক্যারেট। যার কারনে প্রকৃত অর্থে প্রতি ট্রাকে টিআর বাবদ ওজন বাদ দেয়ার নিয়ম (৯০০×২.৮ কেজি) ২.৫ টন। কিন্তু শুল্ক ফাঁকির কারনে পরীক্ষনের সময় টিআর বাবদ ওজন বাদ দেয়া হয়(১৯০০×৩.৫ কেজি) ৬.৬ টন। ফলে প্রতি ট্রাকে ৪ টন পণ্যের শুল্ক ফাঁকি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। ৪ টন আনারের শুল্কর পরিমান প্রায় ২ লাখ টাকা। এভাবে যদি ১০ ট্রাক আনারের শুল্ক ফাঁকি দেয়া হলে তার পরিমান দাঁড়ায় প্রায় ২০ লাখ টাকা। এছাড়াও ভারতীয় টমেটো,কাঁচা মরিচ ও হিমায়িত মাছ আমদানির সময় একই পন্থায় শুল্ক ফাঁকির বিষয়টি ওপেন সিক্রেট। শুল্ক গোয়েন্দার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বন্দরে শুল্ক ফাঁকির তদারকির দায়িত্ব থাকলেও তার ভূমিকা রহস্যজনক। বিষয়টি জানার জন্য কাস্টমস হাউজ এর কমিশনারকে ফোন করেও তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।