হোম আন্তর্জাতিক পাকিস্তানে নির্বাচন: কারচুপির বিরুদ্ধে রাজপথে পিটিআই নেতাকর্মীরা

পাকিস্তানে নির্বাচন: কারচুপির বিরুদ্ধে রাজপথে পিটিআই নেতাকর্মীরা

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 89 ভিউজ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে কারচুপি ও অনিয়মের অভিযোগ তুলেছে ইমরান খানের দল তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)। শুধু তাই নয়, ফলাফল কারচুপির প্রতিবাদে রাজপথে বিক্ষোভও শুরু করেছেন দলটির নেতাকর্মী ও সমর্থকরা।

পিটিআই’র সঙ্গে বিক্ষোভে যোগ দিয়েছে জামায়াতে ইসলামী (জেআই) ও জমিয়ত উলামা ইসলামসহ (জেইউআই-এফ) বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল।

গত বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচিত অনুষ্ঠিত হয়। ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির ২৬৬টি আসনের মধ্যে ২৬৫টির (একটিতে স্থগিত) পাশাপাশি প্রাদেশিক সরকার নির্বাচনে ভোটগ্রহণ করা হয়।

পরদিন শুক্রবারের (৯ ফেব্রুয়ারি) মধ্যে পুরো ফলাফল ঘোষণা করার কথা থাকলেও পাকিস্তান নির্বাচন কমিশন (ইসিপি) তা পারেনি বা করেনি। ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার প্রায় ১২ ঘণ্টা পর ফল প্রকাশ শুরু হলেও তা ছিল খুবই ধীরগতিতে।

ফলাফল প্রকাশে দেরি হওয়ায় কারচুপির অভিযোগে ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করে বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল। উদ্বেগ প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও। চারদিন পর রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে এসে ২৬৫টি আসনের মধ্যে ২৬৪টির ফল জানা গেছে।

ইসিপির ফল অনুযায়ী, ২৬৪ আসনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১০২টি আসনে জয় পেয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। যার মধ্যে ৯৭ জনই ইমরান খানের পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) সমর্থিত। ৭৫ আসনে জয় পেয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে তিনবারের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের দল পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন)।

৫৪টি আসন পেয়েছে আসিফ আলি জারদারি ও বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির পাকিস্তান পিপল’স পার্টি (পিপিপি)। ১৭টি আসন পেয়ে চতুর্থ স্থানে রয়েছে মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্ট পাকিস্তান (এমকিউএম-পি)।

কোনো দলই সংখ্যাগরিষ্ঠতা তথা এককভাবে সরকার গঠনে প্রয়োজনীয় ১৩৪টি আসন না পাওয়ায় শেষ দল দুটি তথা পিপিপি ও এমকিউএম-পি ‌‌কিংমেকার হয়ে উঠেছে।

এছাড়া ছোট্ট ছোট আরও কয়েকটি দল ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছে। এর মানে সরকার গঠনের ক্ষেত্রে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোকে একটা অনেক কাঠখড় পোড়াতে হবে।

পুরোপুরি ফল প্রকাশ হওয়ার বেশ আগে থেকেই দৌড়ঝাপ শুরু করেছে দ্বিতীয় স্থানে থাকা পিএমএল-এন নেতারা। সময় গড়ানোর সঙ্গে যা গতি পাচ্ছে।

এর মধ্যেই নির্বাচনের ফলপ্রকাশে দেরি হওয়ায় অনিয়ম কারচুপির অভিযোগ তোলে বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল। গত শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) থেকে রাজধানী ইসলামাবাদ ও পেশোয়ারসহ পাকিস্তানের বিভিন্ন শহরে জমায়েত হয়ে বিক্ষোভ করছেন পিটিআই, জেআই ও জেইউআই-এফ-এর হাজার হাজার নেতাকর্মী ও সমর্থক।

পিটিআই অভিযোগ করেছে, তাদের অনেক প্রার্থী নির্বাচনে জিতলেও ফলাফলে কারচুপি করা হয়েছে। ইসলামাবাদ থেকে আল জাজিরার সাংবাদিক কামাল হায়দার বলেছেন, পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা বিশাল ব্যবধানে জয়ী হয়েছে, এমন তিনটি আসনে স্থগিতাদেশ দেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, যদি আইনি উপায়ে এর নিষ্পত্তি না করা হয়, তাহলে এই বিক্ষোভ সারাদেশে ছড়িয়ে পড়তে পারে এবং সম্ভবত একটি আন্দোলনে পরিণত হতে পারে।

এই ধরনের স্থগিতাদেশের কারণে পরবর্তী সরকার গঠনে বিলম্ব হবে বলেও মনে হচ্ছে বলে জানান কামাল হায়দার। পিটিআই সমর্থকরা বলছেন, তারা চুপ করে বসে থাকবেন না এবং জনগণ তাদের দলের প্রতি যে ম্যান্ডেট দিয়েছেন তা চুরি হতে দেবেন না।

পিটিআই নেতাকর্মী যুক্তি দেখিয়ে বলছেন, নির্বাচনের দিন ইন্টারনেট বন্ধ হওয়ার ঘটনা দেখিয়ে দিয়েছে যে রাষ্ট্র কীভাবে ফলাফলের ওপর হস্তক্ষেপের চেষ্টা করেছে। আমরা বিশ্বাস করি, যে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো এর সাথে সম্পূর্ণভাবে জড়িত এবং এটা দুঃখজনক। তাদের জনগণের ভোটকে সম্মান করা উচিত।

পিটিআই স্পষ্ট করেই বলছে, ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির অন্তত ১৮টি আসনের ফলাফল প্রিসাইডিং কর্মকর্তারা ‌পরিবর্তন করেছেন।

ওই আসনগুলো পিটিআই জিতেছে। পার্টির মহাসচিব ওমর আইয়ুব এক্স-এ এক পোস্টে বলেছেন, জনগণ পিটিআইকে যে ম্যান্ডেট দিয়েছে তা এই দুর্নীতিবাজ, মেরুদণ্ডহীন আমলারা চুরি করছে।

কারচুপির অভিযোগ নিয়ে আদালতে যাওয়ারও ঘোষণা দিয়েছে। এদিকে নওয়াজের পিএমএলএন কারচুপির অভিযোগ মোকাবিলা করার জন্য একটি আইনজীবী দল গঠন করেছে। সূত্র: ডন ও আল জাজিরা।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন