জাতীয় ডেস্ক:
সাম্প্রতিক ইসরাইলি হামলায় নিহত ফিলিস্তিনি জনগণের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে জাতীয় সংসদ একটি শোক প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। রোববার (২২ অক্টোবর) স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদের ২৫তম অধিবেশনে এই প্রস্তাব পাস হয়।
শোক প্রস্তাবটি উত্থাপন করেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী; যা সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়।
শোক প্রস্তাবে স্পিকার বলেন, গাজা ও ফিলিস্তিনের অন্যান্য স্থানে ইসরাইলি দখলদার বাহিনীর সাম্প্রতিক বর্বরোচিত হামলায় নিহতদের প্রতি সংসদ গভীর শোক প্রকাশ করছে এবং তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছে।
‘সংসদ শোকাহত পরিবারের সদস্যদের প্রতিও সমবেদনা প্রকাশ করেছে,’ বলেন তিনি।
এছাড়া মরক্কো এবং আফগানিস্তানে ভূমিকম্পে, লিবিয়া এবং সিকিমে বন্যায় নিহতদের জন্যও সংসদে শোক প্রকাশ করা হয়।
এর আগে গাজায় ইসরাইলি বাহিনীর বর্বরোচিত হামলায় ফিলিস্তিনি নাগরিকদের মৃত্যুতে গত শনিবার সারা দেশে রাষ্ট্রীয় শোক পালন করা হয়। একদিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করে গত বৃহস্পতিবার প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। সেই মোতাবেক, এদিন বাংলাদেশের সব সরকারি, আধাসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সব সরকারি ও বেসরকারি ভবন এবং বিদেশে বাংলাদেশ মিশনগুলোতে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়।
এর আগে বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে সড়ক ভবনে এক অনুষ্ঠানে ফিলিস্তিনিদের জন্য শোক পালনের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ইসরাইল যেভাবে হাসপাতালে হামলা করে নারী-শিশুদের হত্যা করেছে, আমরা এর নিন্দা জানাই। দ্রুত এটা বন্ধ করতে হবে; ফিলিস্তিনিরা যেন ন্যায্য জায়গা ফেরত পায়।
শুক্রবার জুমার পর সারাদেশের মসজিদগুলোতে দোয়া ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে প্রার্থনারও অনুরোধ জানান প্রধানমন্ত্রী। সেই মোতাবেক শুক্রবার (২০ অক্টোবর) সারা দেশে মসজিদে মসজিদে জুমার নামাজের পর ফিলিস্তিনের মজলুম স্বাধীনতাকামী মানুষের জন্য দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে জুমার নামাজ-পরবর্তী মোনাজাতে অংশ নিয়ে মহান সৃষ্টিকর্তার দরবারে চোখের পানি ফেলেন ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। হাজার হাজার মাইল দূরে অবস্থিত ফিলিস্তিনের শান্তিকামী মানুষের জন্য শূন্যে দুই হাত তুলে দোয়া করেন মহান রবের দরবারে। ধ্বংসলীলার পরিবর্তে সৃষ্টিকর্তা যেন শান্তি প্রতিষ্ঠা করেন সেই প্রার্থনা করেন তারা।
শুধু মসজিদ নয়, এদিন অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়েও ফিলিস্তিনিদের জন্য প্রার্থনা করা হয়।
ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের হামলার পর থেকে অবরুদ্ধ গাজায় টানা বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইলি বাহিনী। দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে চলা হামলায় গাজায় নিহতের সংখ্যা ৪ হাজার ছাড়িয়েছে। বাস্তুচ্যুত হয়েছেন ১০ লাখ মানুষ। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও পানির সরবরাহ বন্ধ করে দেয়ায় গাজায় দেখা দিয়েছে মানবিক বিপর্যয়। এমন অবস্থায় অনেক দেশ মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে ফিলিস্তিনিদের দিক থেকে। তবে দেশেটির মানুষের পাশে থাকার কথা জানিয়েছে বাংলাদেশ।