হোম অর্থ ও বাণিজ্য দেশের পোশাক শিল্প নিয়ে গার্ডিয়ানের মনগড়া গল্প, উদ্দেশ্য কী?

বাণিজ্য ডেস্ক:

বেতন ও মজুরি বাড়ানোর দাবিতে কয়েক মাস আগেই দেশের সড়কগুলো উত্তপ্ত হয়ে ওঠে তৈরি পোশাক শ্রমিকদের আন্দোলনে। জ্বালাও-পোড়াও এবং সংঘর্ষে এ খাতে বড় ধরনের ক্ষতি হয়। এসব কাটিয়ে যখন শিল্পটি আবারও তার গতিতে ফিরছে তখন শুরু হয়েছে নতুন ষড়যন্ত্র।

সম্প্রতি মার্কিন আট কংগ্রেসম্যান পোশাকশ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি ও অধিকার রক্ষায় বাংলাদেশ সরকারকে চাপ দিতে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বৈশ্বিক ক্রেতাদের সংগঠন আমেরিকান অ্যাপারেল অ্যান্ড ফুটওয়্যারকে (এএএফএ) চিঠি দেন।

এরই মধ্যে, বাংলাদেশের পোশাক শ্রমিকদের যাপিত জীবন নিয়ে প্রভাবশালী ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ানে একটি প্রতিবেন প্রকাশ হয়েছে। ওই প্রতিবেদনে ফ্রিল্যান্সার লেখক তাসলিমা দাবি করেছেন দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির সঙ্গে তাল মেলাতে না পেরে নারী পোশাক শ্রমিকরা সন্তান ও নিজের জীবন বাঁচাতে যৌনকর্মে জড়িয়ে পড়ছেন।

‘ওমেন ম্যাকিং খ্রিস্টমাস জাম্পারস ফর ইউকে টার্নস টু সেক্স ওয়ার্ক টু পে বিল’ শিরোনামের লেখায় রুবি রফিক (ছদ্মনাম) নামের এক পোশাক শ্রমিকের তথ্য তুলে ধরা হয়। এতে দাবি করা হয়, মূল্যস্ফীতির কারণে যেভাবে জীবনযাপনের ব্যয় বাড়ছে তাতে রাতের বেলা যৌনকর্মী হিসেবে কাজ করার কোনো বিকল্প নেই রুবির কাছে।

গার্ডিয়ানের বরাত দিয়ে দেশের দৈনিক মানবজমিনও সংবাদটি প্রকাশ করে। ‘যৌনকর্মে নামতে বাধ্য হচ্ছেন পোশাক শ্রমিকরা’ এমন শিরোনামের সংবাদে পোশাক শিল্পের নারী শ্রমিকদের যে দৃশ্য তুলে ধরা হয়েছে তা নিয়েও সমালোচনা করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

তবে এমন গল্প দেশের গার্মেন্টস শিল্পকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্রের অংশ বলে মনে করেন পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠনগুলো।

বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সহসভাপতি শহীদুল্লাহ আজিম বলেন, পোশাক শ্রমিকরা স্বল্প মজুরির কারণে যৌন পেশায় যেতে বাধ্য হচ্ছেন, এটা একটা ডাহা মিথ্যা কথা। বরং দেশে নারীর ক্ষমতায়নে পোশাক শিল্পের অবদান রয়েছে। পোশাক খাতের ওপর ভর দিয়েই দেশের অসংখ্য নারী অর্থনৈতিকভাবে স্বনির্ভর হয়েছেন।

আর নিট পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠনের (বিকেএমইএ) নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম দাবি করেন, প্রতিবেদনে যে পোশাক শ্রমিকের কথা বলা হচ্ছে, তিনি কোনোভাবেই পোশাক শিল্পের সঙ্গে জড়িত বলে আমরা মনে করি না। আমরা মনে করি, যারা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে চায়, তাদেরই তৈরি করা সাজানো প্রোপাগান্ডা ও ষড়যন্ত্রের অংশ এই প্রতিবেদন।

গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে যা বলা হয়

প্রতিবেদনটিতে পোশাক শ্রমিক রুবি যে কারখানায় কাজ করেন তা টেসকো, মাতালান এবং নেক্সটসহ বড় বড় ব্রিটিশ ব্র্যান্ডগুলোর কাছে পোশাক বিক্রি করে। বড়দিনের আগ পর্যন্ত তারা ‘সান্তা’স লিটল হেলপার’ লেখা জাম্পার তৈরিতে ব্যস্ত ছিলেন। রুবি নিজে কখনো সিনেমাটি দেখেননি কিন্তু তার হাস্যোজ্জ্বল সবুজ মুখটি তার কাছে মজার লেগেছে।

তবে তার কাছে তার জীবন মজার নয়। তাকে সপ্তাহে সাত দিন ১০ ঘণ্টা করে কাজ করার পরেও হিমশিম খেতে হচ্ছে। তিনি সপ্তাহে প্রায় ১৫ পাউন্ড উপার্জন করেন। হাজার হাজার জাম্পারের মধ্যে মাত্র একটির খুচরা মূল্যের চেয়ে কম আয় করেন তিনি। আশা করা হয়েছিল যে, নতুন ন্যূনতম মজুরি ডিসেম্বরে কার্যকর হবে। কিন্তু এখনো তা পরিশোধ করা হয়নি।

সাধারণত এক বেলা না খেলেই কিংবা ছোট্ট মেয়ে মায়ার লাঞ্চবক্সে খাবার একটু কমিয়ে দিয়ে পরিস্থিতি মোকাবিলার চেষ্টা করছিলেন রুবি। কিন্তু তার স্বামী তাকে ছেড়ে চলে যাওয়ায় পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে যায়। তার ১৬ বছরের ছেলে সাকিব ক্ষুধার্ত হয়ে চুরি করতে শুরু করে।

অবস্থা এমন দাঁড়ায় যে, রুবি আর তার বাসা ভাড়া দিতে পারছেন না। ঋণ নিয়ে সামাল দেয়ার চেষ্টা করেন, কিন্তু সেই ঋণ পরিশোধেও তাকে সংগ্রাম করতে হচ্ছে। গত বছর থেকে তার অবস্থা ভয়াবহ আকার ধারণ করে। এ অবস্থায় তিনি যৌনকর্মীর জীবন বেছে নিতে বাধ্য হয়েছেন বলে প্রতিবেদনে দাবি করা হয়।

প্রতিবেদনে স্বনামধন্য আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড টেসকোর একজন মুখপাত্রের বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে। তিনি বলেন, টেসকো ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধিকে সমর্থন করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যা শ্রমিকদের এবং তাদের পরিবারের মৌলিক চাহিদাগুলোকে পূরণ করবে। আমরা আমাদের সরবরাহ শৃঙ্খলে থাকা সমস্ত শ্রমিকদের যেন প্রয়োজনীয় অর্থ প্রদান করা হয় তা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

পোশাক শিল্প মালিকদের কাঠগড়ায় আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডগুলো

তবে বিকেএমইএ’র নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডগুলোর আচরণ নিয়ে উল্টো প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডগুলো বাংলাদেশ থেকে কত দামে পোশাক কেনে? আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডগুলো বাংলাদেশের পোশাক উপযুক্ত দামে না কিনলে, একা পোশাক কারখানার মালিকদের ঘাড়ে পোশাক শ্রমিকদের স্বল্প মজুরির দায়ভার চাপানো ন্যায্য নয়।’

তার দাবি, বাংলাদেশের পোশাক শ্রমিকদের মজুরি কম হওয়ার ব্যাপারে একতরফা বাংলাদেশি উৎপাদকদের দায়ী করা হচ্ছে, অথচ বাংলাদেশের পোশাকের পাইকারি ক্রেতা যে আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডগুলো তারা কিন্তু তাদের কেনা পোশাকের মজুরি বাড়াচ্ছে না। বরং নিজেদের কারখানা সচল রাখতে অনেক ক্ষেত্রেই পোশাক কারখানার মালিকরা লোকসান দিয়ে হলেও আন্তর্জাতিক অর্ডার ধরতে বাধ্য হচ্ছেন। যেখানে আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডগুলো পোশাকের মূল্য বাড়াচ্ছে না, সেখানে একতরফাভাবে বাংলাদেশের পোশাক কারখানার মালিকদের দায়ী করা যুক্তিসঙ্গত নয়।

তিনি আরও বলেন, আমি বলবো বাংলাদেশের পোশাক শিল্পকে যারা ধ্বংসের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত, তাদের এটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ষড়যন্ত্র। আর এই প্রতিবেদনে যে পোশাক শ্রমিকের কথা বলা হচ্ছে, তিনি কোনোভাবেই পোশাক শিল্পের সঙ্গে জড়িত বলে আমরা মনে করি না। আমরা মনে করি, যারা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে চায়, তাদেরই তৈরি করা প্রোপাগান্ডা ও ষড়যন্ত্রের অংশ হলো গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন।

এসব প্রচারণার ব্যাপারে বাংলাদেশের পোশাক রফতানিকারক ও বিকেএমইএ’র তরফে কোন পদক্ষেপ নেয়া হবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে মোহাম্মদ হাতেম বলেন, অবশ্যই এটা নিয়ে সরকারের সঙ্গে কথা বলবো।

গার্ডিয়ানে প্রকাশিত প্রতিবেদনকে চ্যালেঞ্জ করে মোহাম্মদ হাতেম বলেন, প্রয়োজনে এই প্রতিবেদক আসুক, তাকে সঙ্গে নিয়ে আমরা কারখানাগুলোতে যাবো, সেখানে নিজেরাই দেখতে পাবেন, আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডগুলো বাংলাদেশ থেকে কত দামে পোশাক কেনে?

বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা দেয়া হবে, এ ধরনের উদ্দেশ্যমূলক প্রচারণার সঙ্গে এই প্রতিবেদনের সম্পর্ক আছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, সার্বিকভাবে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারীরা যে উদ্দেশ্যমূলক প্রোপাগান্ডা চালাচ্ছে এই ধরনের প্রতিবেদন তারই অংশ।

পাটশিল্পকে ধ্বংসের মতো ষড়যন্ত্র চলছে

দেশের পোশাক শিল্প ঘিরে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে জানিয়ে বিজিএমইএ সহসভাপতি শহীদুল্লাহ আজিম বলেন, কোনো কোনো মহল উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে প্রচারণার সঙ্গে জড়িত। আন্তর্জাতিক পোশাক শিল্পের বাজারে আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বীরাও এতে উসকানি দিচ্ছে। যেভাবে আমাদের পাটশিল্পকে ধ্বংস করা হয়েছে, ঠিক সেভাবে আমাদের পোশাক শিল্পকেও ধ্বংসের ষড়যন্ত্র চলছে। পাশাপাশি এদের দেশীয় কিছু এজেন্ট রয়েছে, যারা কিছু টাকা দিলেই বিক্রি হয়ে যায়।

এই ধরনের প্রতিবেদন ও বাংলাদেশ বিরোধী প্রচারণার বিরুদ্ধে বিজিএমইএ’র তরফে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, অবশ্যই আমরা এর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেব। গার্ডিয়ানেও আমাদের প্রতিবাদ পাঠাবো। এই প্রতিবেদন সম্পূর্ণ মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

এ সময় সরকারের প্রতি এ বিষয়ে শক্ত পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়ে আজিম বলেন, পোশাক শিল্পকে রক্ষা করা সরকারেরই দায়িত্ব। আন্তর্জাতিক মহল ও কূটনৈতিকভাবে সরকারকে এ বিষয়ে উপযুক্ত পদক্ষেপ নিতে হবে।

মার্কিন আট কংগ্রেসম্যানের চিঠি নিয়েও প্রশ্ন

গার্মেন্টস শ্রমিকদের নতুন মজুরি কাঠামো বাস্তবায়নের তথ্য আন্তর্জাতিক বায়ারদের জানানোর দেড় মাস পর ৮ মার্কিন কংগ্রেসম্যান বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে চিঠি দেন। দেশের তৈরি পোশাক খাত নিয়ে এটিকে ষড়যন্ত্র হিসেবেই দেখছেন গার্মেন্টস ব্যবসায়ীরা।

গত ৮ নভেম্বর আমেরিকান অ্যাপারেল অ্যান্ড ফুটওয়্যার অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট স্টিভেন ল্যামার এবং নীতি নির্ধারণের দায়িত্বে থাকা সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট নাথে হারম্যান বরাবর বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি ফারুক হাসানের দেয়া পৃথক চিঠিতে বাংলাদেশের গার্মেন্টস শ্রমিকদের নতুন মজুরি কাঠামো বাস্তবায়নের তথ্য অবহিত করা হয়।

এতে উল্লেখ করা হয়, একজন শ্রমিকের সর্বনিম্ন মজুরি ১২ হাজার ৫০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, যা আগের তুলনায় অন্তত ৫৬ শতাংশ বেশি।

অথচ মজুরি কাঠামোর মীমাংসিত বিষয় নিয়ে দেড় মাস পর ৮ মার্কিন কংগ্রেসম্যান চিঠি দেয়ায় গার্মেন্টস ব্যবসায়ীদের মধ্যেই প্রশ্নের জন্ম নিয়েছে।

তবু বিশ্বসেরা বাংলাদেশ

এত সব ষড়যন্ত্রকে পাশ কাটিয়েও এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্প। সম্প্রতি পোশাক কারখানার আন্তর্জাতিক এক জরিপমতে, এবার অনন্য এক অর্জনের সাক্ষী হয়েছে বাংলাদেশ। জরিপ বলছে, বিশ্বের সবচেয়ে সেরা ১০০টি কারখানার ৫০টিরই মালিক বাংলাদেশ। আর দ্বিতীয় স্থানে থাকা চীনে আছে মাত্র ১০টি কারখানা।

বিজিএমইএ’র পরিচালক মো. মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর ১০ বছরের ধারাবাহিক চেষ্টার ফল হিসেবেই আমাদের সাফল্য এসেছে। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যেও আমরা আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ‘লিডারশিপ ইন এনার্জি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল ডিজাইন’ (লিড) সনদ পাওয়ার ক্ষেত্রে ক্রমেই এগিয়ে যাচ্ছি।

জরিপের তথ্যমতে, ১০টি কারখানা নিয়ে তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে চীন। আর সম্পূর্ণ কমপ্লায়েন্ট ৯টি কারখানা নিয়ে তালিকার তৃতীয় স্থানে আছে পাকিস্তান, ৬টি করে কারখানা আছে ভারত ও শ্রীলঙ্কায়। রফতানিতে বাংলাদেশের অন্যতম প্রতিপক্ষ ভিয়েতনাম আর তাইওয়ানে সেরা ১০০টিতে থাকা কারখানার সংখ্যা মাত্র ৪টি করে।

এদিকে বিশ্বের সবচেয়ে নিরাপদ ও সবুজ পোশাক কারখানার দেশ হিসেবেও স্বীকৃতি মিলেছে বাংলাদেশের। ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড সেন্টার (আইটিসি) তাদের সবশেষ প্রকাশনায় বাংলাদেশকে এ স্বীকৃতি দেয়। এছাড়া বাংলাদেশ পোশাক উৎপাদন ও রফতানিকারক উদ্যোক্তাদের সংগঠন (বিজিএমইএ) ‘ইফেকটিভ ম্যানেজমেন্ট অব ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন’ ক্যাটাগরিতেও সেরা হিসেবে মনোনীত হয়েছে।

বাংলাদেশে বর্তমানে ১৭৩টি সবুজ পোশাক কারখানা আছে। সে হিসেবে বাংলাদেশে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি সংখ্যক সবুজ পোশাক কারখানা দেশ। বাংলাদেশ দীর্ঘ সময় ধরে এ শীর্ষস্থান দখল করে রেখেছে।

সবশেষ তথ্য অনুসারে, দেশের মোট ১৭৩টি সবুজ কারখানার মধ্যে ৫৪টি কারখানা প্লাটিনাম রেটিং, ১০৫টি গোল্ড রেটিং ও ১০টি সিলভার রেটিং পেয়েছে। এ ছাড়া ৪টি কারখানা কোনোও রেটিং পায়নি, তবে সনদ পেয়েছে। বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ইউএসজিবিসি এসব কারখানাকে এ স্বীকৃতি দিয়েছে। সবুজ কারখানার তালিকায় বাংলাদেশের পরের অবস্থানে রয়েছে ভিয়েতনাম ও ইন্দোনেশিয়া।

এ অবস্থায় পোশাক শিল্পকে এগিয়ে নিতে আন্তর্জাতিক ক্রেতা, বড় বড় ব্র্যান্ড হাউস, সরকার, শ্রমিক ও মালিকপক্ষের সমন্বিত উদ্যোগ নেয়অর আহ্বান জানিয়েছেন শিল্প সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন বাংলাদেশকে পিছিয়ে দেয়ার এক ধরনের অপচেষ্টার অংশ হতে পারে বলে মনে করেন সিরডাপের গবেষণা পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন।

তিনি বলেন, এটা হতে পারে প্রতিযোগী দেশগুলো থেকে বাংলাদেশকে পিছিয়ে দেয়ার জন্য কোনো সংবাদ বা নিষেধাজ্ঞাকে তরান্বিত করার কোনো কৌশল। কারণ, প্রতিবেদনে যা চিত্রিত করা হয়েছে এটা বাংলাদেশের পোশাক খাতের সাধারণ চিত্র না। এমনকি অর্থনৈতিকভাবে চাপে পড়লেই যে এ ধরনের নিষিদ্ধ পথ আর্থিক সুবিধা দিয়ে স্বচ্ছল করে দিচ্ছে, বিষয়টা তেমনও না।

অধ্যাপক হেলাল উদ্দিনের মতে, অর্থনৈতিকভাবে বাড়তি সুবিধা পাওয়ার আরও অনেক উপায় আছে। এমনকি এই নিষিদ্ধ কর্মে নিয়োজিত হতেতো কোনো পোশাক কারখানা মালিক কর্মীকে বাধ্য করছে না। তাহলে কেন এই দায় শিল্প ও শিল্প মালিক বা দেশ নিতে যাবে। যে উদ্দেশ্যে এই সংবাদটি করা হোক না কেন, তা গ্রহণযোগ্যতা পাওয়ার কথা নয়। কারণ সবাই জানে এটা বাংলাদেশ ও আমাদের পোশাক খাতের সাধারণ দৃশ্য না।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন