নড়াইল অফিস:
নড়াইল-০২ আসনে অনেক গুঞ্জনের পরে লোহাগড়া উপজেলা আ.লীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক সৈয়দ ফয়জুল আমির লিটু প্রার্থী বিদ্রোহী হিসেবে মনোনয়ন ক্রয় করেছিলেন। ৩টি জোরালো কারণে মনোনয়ন বাতিল করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। বিদ্রোহী প্রার্থী সৈয়দ ফয়জুল আমির লিটু দল থেকে বহিস্কৃত বলে দাবী করছেন সিনিয়র নেতারা, অন্যদিকে দলের সাধাারন সম্পাদক সহ অন্য অংশের সমর্থন রয়েছে বলে আওয়ামীলীগের অনেকের ধারনা।
গত ২০১৮ সালে দলের মনোনয়ন পাবার পর থেকেই মাশরাফির বিপক্ষে স্থানীয় অনেক নেতাই নাখোশ হয়ে পড়েন। পরে নানাভাবে কয়েকজন মাশরাফির উন্নয়ন রাজনীতিতে তারা ভীড়লেও তলে তলে বিরোধীতা করেছেন। দলীয় মনোনয়ন ক্রয়ে যা স্পস্ট হয়ে ওঠে। মনোনয়ন দৌড়ে প্রতিদ্বন্দিতা করতে এগিয়ে যান দলের জেলা সাধারন সম্পাদক নিজামউদ্দিন খান নিলু সহ ডজন খানেক নেতা। দ্বাদশ নির্বাচনে মাশরাফি মনোনয়ন পাবার পরে গোপনে তারা জোটবদ্ধ হতে থাকে। নানা অযুহাতে মাশরাফির উপর ক্ষোভ প্রকাশ করে সংবাদ সম্মেলন করেন জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক নিজামউদ্দিন খান নিলু। তিনি মাশরাফির সাথে থাকা নেতাকর্মী দের হোন্ডা আর গুন্ডার সাথে তুলনা করেন। মাশরাফির মনোনয়ন ফরম জমা দেবার সময় তার অনুপস্থিতি তা স্পস্ট করে।
এদিকে দলে কোন বাধা না থাকলেও মাশরাফির জনপ্রিয়তার সাথে পাল্লা দিয়ে বড় কোন নেতা ই মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেননি। এক্ষেত্রে তারা ব্যবহার করেছেন গত জেলা পরিষদ নির্বাচনে পরাজিত সৈয়দ ফয়জুল আমির লিটু কে। যিনি লোহাগড়া উপজেলা সাবেক সাধারন সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান। উপজেলা চেয়ারম্যান থাকাকালীন ২০১৮ সালে তার বিরুদ্ধে টিআর প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ এর অভিযোগে দুদকে মামলা হয়। ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকার রমনা থানায় করা ঐ মামলা নং ৩৩,তারিখ-১৬.০৫.২০১৮,ধারা-২(২)/২৭(১)। এই মামলার তথ্য হলফনামায় প্রদান করেননি বহিস্কৃত ঐ নেতা। তার নামে হত্যা সহ ৬টি মামলা রয়েছে,যার ১টিতে খালাশ এবং বাকি দুটির এর মধ্যে হলফনামায় ৫টি মামলার তথ্য দিলেও বাকি একটি মামলার তথ্য দেননি। মামলার অস্পূর্ন তথ্য,আয়কর রিটার্ন দাখিল না করা এবং ১ভাগ ভোটারের স্বাক্ষর জালের কারনে তার মনোনয়ন বাতিল করে রিটানিং কর্মকর্তা।
নড়াইল কোর্ট ইন্সপেক্টর মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম খান বলেন, লিটু সাহেবের নামে ৬ টি মামলা হলেও তিনি তথ্য দিয়েছেন ৫টির,এটি অসম্পূর্ন তথ্য। ঢাকায় দুদকের মামলার কোন তথ্য তিনি দেননি যেটি আমরা রিটানিং অফিসকে অবগত করেছি।
জেলা রিটানিং কর্মকর্ত ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশফাকুল হক চৌধুরী বলেন,হলফনামায় তিনি ৩ পর্যায়ে ভুল তথ্য প্রদান করায় তার মনোনয়ন পত্র বাতিল করা হয়েছে,আপিল করার অধিকার আছে,বাকি ব্যবস্থা নির্বাচন কমিশন নিবেন।
৪ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র বাতিলের পর প্রার্থী সৈয়দ ফয়জুল আমির নির্বাচন কমিশনে আপিল করবেন বলে জেলা রিটানিং অফিস থেকে সার্টিফাইড কপি তুলেছেন। অসম্পূর্ন তথ্য প্রদানের ব্যাপারে তার সাথে কথা বলার জন্য (০১৯২৫৭৬৯৬৩১) নম্বরে একাধিকবার ফোন করলেও ও তিনি রিসিভ করেননি।
জেলা আওয়ামীলীগ সূত্রে জানা গেছে, বিগত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তিনি বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে অংশগহন করেন। সে সময় তাবে দল থেকে বহিস্কার করা হয়,যা পরে পরিবর্তন করা হয়নি।
জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এড.সুবাস চন্দ্র বোস বলেন,আমি শুনেছি আমাদের কোন নেতার সমর্থকেরা লিটুর সাথে আছেন। তলে তলে অনেকে দল থেকে বহিস্কৃত নেতা ফয়জুল আমির লিটুর পক্ষে কাজ করছেন। এগুলো সংগঠন পরিপন্থী কাজ,এর সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।