হোম জাতীয় ডুয়োলিঙ্গের ডিসকাউন্টের ফাঁদে শিক্ষার্থীরা

জাতীয় ডেস্ক :

ইংরেজি দক্ষতা যাচাইয়ের অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ডুয়োলিঙ্গ ইংলিশ টেস্টে ডিসকাউন্টের ফাঁদ। ভুয়া কার্ডে পরীক্ষার সুযোগ দেয় প্রতারক প্রতিষ্ঠান। যাচাই-বাছাইয়ের সপ্তাহখানেকের মধ্যেই বাতিল হয় ফলাফল। এতে স্কলারশিপ বাতিলসহ নানা বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে বিদেশে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের।

বিদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি আর কাজ পেতে ইংরেজি দক্ষতা যাচাইয়ের অনলাইন প্লাটফর্ম ডুয়োলিঙ্গ ইংলিশ টেস্ট। যে কোনো সময় যে কোনো স্থান থেকে পরীক্ষায় অংশ নেয়ার সুযোগ, মাত্র এক ঘণ্টায় পরীক্ষা আর দুদিনে ফল পাওয়ায় জনপ্রিয়তায় তুঙ্গে এই টেস্ট।

এতে অংশ নেয়ার নির্ধারিত ফি ৪৯ ডলার। টাকার অঙ্কে তা প্রায় ৫ হাজার টাকা হলেও মাত্র ২ হাজার ৯০০ টাকায় অফার দিচ্ছে স্টাডি জোন ও ইংলিশ ওয়ার্ল্ডসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। ডিসকাউন্টের এই ফাঁদে পা দিয়ে সাময়িক সময়ের জন্য ডুয়োলিঙ্গ থেকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ ও ফল পাওয়ার সুযোগ পেলেও সপ্তাহ খানেকের যাচাই-বাছাইয়ে তা বাতিল হয়ে যায়। এতে স্কলারশিপ বাতিলসহ নানা বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।

ভুক্তভোগী এক শিক্ষার্থী বলেন, ডুয়োলিঙ্গ প্রতিষ্ঠানে আমি মেইল করি। ওরা আমাকে বলে আমার পেমেন্ট যেটা করা হয়েছে সেটা ফ্রড পেমেন্ট করা হয়েছে। এ কারণে আমার রেজাল্ট বাতিল করেছে। সেই সঙ্গে আমার ইন্টারভিউ বাতিল হয় ও অ্যাডমিশনের টাকাও লস হয়।

আরেক ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বলেন, আমি মিরপুর কালশী স্টাডি জোন নামে একটা প্রতিষ্ঠান থেকে ডুয়োলিঙ্গ কোর্স কিনেছিলাম। আমার রেজাল্ট আসিনি তারপরে আমি ইমেইলের মাধ্যমে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তারা আমাকে জানিয়েছে, আমার এই কোর্স কেনার টাকাটা পায়নি।

খোদ ডুয়োলিঙ্গের নামেই অনলাইনেও গজিয়েছে ডুয়োলিঙ্গ বাংলাদেশ নামের একটি প্রতিষ্ঠান। অথচ সংস্থাটির কোনো শাখা নেই বাংলাদেশে। নামে বাংলাদেশ থাকলে যোগাযোগের জন্য দেয়া আছে যুক্তরাষ্ট্রের একটি হোয়াটস অ্যাপ নম্বর। ডিসকাউন্টের বিষয়ে জানতে চাইলে মোবাইল ফোনের সংযোগ কেটে দেয় কথিত ডুয়োলিঙ্গ বাংলাদেশ নামের ফেসবুক সর্বস্ব প্রতিষ্ঠানটি।

আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়ে অনুসন্ধানে নামে সময় সংবাদ। অনেক খোঁজার পর মগবাজারে পাওয়া গেল ইংলিশ ওয়ার্ল্ডের অফিস। সময় সংবাদের উপস্থিতি টের পেয়ে সরে যান প্রতিষ্ঠানের কর্তাব্যক্তিরা। যোগাযোগ করতে চাইলে দেয়া হয় চাকরি হারানো একজনের ভিজিটিং কার্ড। কর্মকর্তার পরিচয় গোপন করে নিজেদের পরিচয় দেন আত্মীয় হিসেবে।

পরামর্শকরা বলছেন, ডুয়োলিঙ্গ নির্ধারিত পেমেন্ট গেটওয়েতে ফি পরিশোধ না করে হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে ভুয়া কার্ড তৈরি করে পরীক্ষার্থীদের টেস্টে অংশগ্রহণের সাময়িক সুযোগ করে দেয় প্রতারক প্রতিষ্ঠানগুলো

স্কলারশিপ পরামর্শক আল মাসুদ সায়মন বলেন, ফেইক কার্ড দিয়ে কোর্সগুলো কিনতেছে তাই সঙ্গে সঙ্গে কোর্সটি কেনা হয়েছে বলে দেখাচ্ছে। আর তখন শিক্ষার্থীরা দেখছে তার কোর্সটি কেনা হয়েছে। তখন তারা পরীক্ষা দিচ্ছে সেই অনুযায়ী রেজাল্ট ও পাচ্ছে। এরপর যখন ডুয়োলিঙ্গ এক সপ্তাহ পর টাকাটা নিতে যায় তখন দেখে পেমেন্ট হয়নি, তাই রেজাল্ট ইনভ্যালিড দেখায়।

টেস্টে অংশগ্রহণকারীদের আরও সতর্ক হওয়ার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন