হোম জাতীয় কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, ২৮৪ গ্রাম প্লাবিত

জাতীয় ডেস্ক :

কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটেছে। এখন পর্যন্ত জেলার ৯ উপজেলার ৪৯টি ইউনিয়নের চর, দ্বীপচর ও নিম্নাঞ্চলের ২৮৪টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এসব গ্রামে প্রায় ২২ হাজার পরিবারের লাখের বেশি মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন দপ্তর থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

এদিকে বৃষ্টি আর উজানের ঢলে জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত ব্রহ্মপুত্র নদ এবং ধরলা ও দুধকুমার নদীতে পানি বেড়েই চলেছে। এতে ক্রমেই নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।

স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানিয়েছেন, রোববার (১৯ জুন) সকাল ৯টায় ব্রহ্মপুত্রের চিলমারী পয়েন্টে বিপদসীমার ৩৪ সেন্টিমিটার ও নুনখাওয়া পয়েন্টে ১৩ সেন্টিমিটার এবং ধরলা নদীর ফেরিঘাট পয়েন্টে বিপদসীমার ২৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল।

এর ফলে বন্যাকবলিত এলাকার মানুষের দুর্ভোগ বেড়েই চলেছে। বাড়িঘরে পানি ওঠায় নৌকায় বসবাস করছেন অনেকে। আর নৌকা না থাকায় পানির মধ্যে চৌকি বা মাচায় ঝুঁকির মধ্যে বসবাস করছেন অনেক পরিবার। ঘরের ভেতরে পানি থাকায় খাবার রান্না করতে পারছেন না। শুকনো খাবার খেয়ে দিন কাটাচ্ছেন তারা।

এদিকে উজানের পাহাড়ি ঢলে আবারও জিঞ্জিরাম নদী উপচে রৌমারী-বড়াইবাড়ী পাকা সড়কের ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এ সড়কের গোয়ালগ্রাম থেকে ইজলামারী পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে সড়কের ওপর দিয়ে প্রবল বেগে পানি ঢুকছে। এর ফলে রৌমারী উপজেলার সদর ইউনিয়নের সাত গ্রাম ইজলামারী, কড়াইকান্দি ছোট মাদারটিলা, বড় মাদারটিলা, কোনাচিপাড়া, মির্জাপাড়া ও নতুন চুলিয়ারচর প্লাবিত হয়েছে।

এছাড়া বন্যাকবলিত হওয়ায় জেলার ৫৮টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শ্রেণি পাঠদান বন্ধ রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম। জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শামছুল আলম জানিয়েছেন, জেলায় এ পর্যন্ত মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের ৩১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্যাকবলিত হয়েছে। এর মধ্যে ২৩টি মাধ্যমিক, ৭টি মাদরাসা এবং ১টি কলেজ রয়েছে।

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাশেদুল হাসান জানান, বন্যার্তদের মধ্যে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ শুরু হয়েছে। শনিবার ( ১৮ জুন) বিকেলে যাত্রাপুর ইউনিয়নের চরাঞ্চলের গ্রামগুলোতে ৩০০ প্যাকেট খাবারসামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। রোববার (১৯ জুন) পাঁচগাছি ইউনিয়নে ২০০ প্যাকেট খাবারসামগ্রী বিতরণ শুরু করা হয়েছে।

প্রতি প্যাকেট ১০ কেজি চাল, ১ কেজি ডাল, ১ কেজি চিনি, ১ কেজি লবণ, ১ লিটার তেল, গুঁড়া করা হলুদ-মরিচের প্যাকেট এবং পানি বিশুদ্ধিকরণ ট্যাবলেট দেয়া হয়েছে।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আবদুল হাই সরকার জানিয়েছেন, বন্যার্তদের সহায়তায় এ পর্যন্ত সাড়ে ৩৯৫ মেট্রিক টন চাল, ১ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার, ১৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা, শিশু খাদ্য ক্রয়ের জন্য ১৯ লাখ ৯৫ হাজার টাকা এবং গো-খাদ্য বাবদ ১৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন