হোম অর্থ ও বাণিজ্য কিছুক্ষণ পর বৈঠক: পোশাক শ্রমিকদের নিম্নতম মজুরি নির্ধারণ হবে আজই!

বাণিজ্য ডেস্ক:

পোশাক শ্রমিকদের জন্য মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) নিম্নতম সর্বোচ্চ বেতন প্রস্তাব করবেন মালিকপক্ষ। তবে তারা বলছেন, ১১ হাজার টাকার বেশি হলে তা কোনোভাবেই শিল্প সহায়ক হবে না।

এদিন পোশাক শ্রমিকদের নিম্নতম বেতন বৃদ্ধি করতে রাজধানীর তোপখানায় মজুরি বোর্ডের সভাকক্ষে বসবেন শ্রমিক ও মালিক প্রতিনিধিরা।

তৈরি পোশাক শিল্পের শ্রমিকদের জন্য সর্বনিম্ন মজুরি প্রস্তাব ও নিজেদের দাবির পক্ষে যুক্তিতর্কের মধ্যদিয়ে এরই মধ্যে শেষ হয়েছে দুটি বৈঠক।

গত ১ নভেম্বরের সভাশেষে মালিকপক্ষ বলেছে, দাবি করা সর্বনিম্ন মজুরি ২০ হাজার ৩৯৩ টাকা পাবেন না শ্রমিকরা। তেমনি তাদের দেয়া প্রস্তাব ১০ হাজার ৪০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে মজুরি চূড়ান্ত করার আশ্বাস দিয়েছেন তারা।

যুদ্ধের দামামায় স্বার্থসিদ্ধির নানা সমীকরণে যখন বিন্যস্ত ভূ-রাজনৈতিক অর্থনীতি, ঠিক এমন এক সময়ে বিশ্ববাজার নির্ভর দেশের তৈরি পোশাক শিল্পের সর্বনিম্ন মজুরি কাঠামো নির্ধারণ করা হচ্ছে।

এ অবস্থায় কেমন বাড়তে পারে বেতন – এমন প্রশ্নের জবাবে সম্প্রতি বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি ফারুক হাসান বলেন,

মূল্যস্ফীতির কারণে সুদের হার বেড়ে যাওয়া ও মুদ্রা সংকোচন নীতিসহ সবকিছু মিলিয়ে কিন্তু পোশাক খাতের চাহিদা কমে গেছে। তবে এটি সত্য যে, মালিকপক্ষ থেকে আমাদের প্রতিনিধি যে প্রস্তাব দিয়েছিল, তার থেকে বেশ অনেকটা বাড়িয়েই আমরা মজুরি দেয়ার প্রস্তাব দেবো।

তবে বেতন বাবদ কতটুকু বাড়তি ব্যয় বহন করতে পারবেন শিল্প মালিকরা – এমন প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন,

১০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ১১ হাজার টাকা মজুরি নির্ধারণ করা হতে পারে। কিন্তু তারপরও অনেক কারখানা মালিক তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারবেন না। তারা বাধ্য হয়ে কারখানা বন্ধ করে দেবেন। কিন্তু এটি অন্তত সহনীয় পর্যায়। এর বেশি যদি যায়, তাহলে সেটি আমাদের স্বাভাবিক সহনশীলতার মধ্যে থেকে বেরিয়ে যাবে।

তবে মজুরি যাই বাড়ুক, শ্রমিকদের রেশনিংয়ের দাবি পূরণে কাজ করারও আশ্বাস দিয়েছেন তারা।

এ বিষয়ে বিজিএমইএর সহ-সভাপতি শহিদুল্লাহ আজিম বলেন, ‘মজুরি বাড়ার পরও আমি বলবো, শ্রমিকদের জন্য একটি রেশনিং সিস্টেম করলে ভালো হয়।’

শ্রমিকের রেশনিংয়ের দাবি যৌক্তিক উল্লেখ করে বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন,
শ্রমিকদের রেশনিংয়ের যে দাবি, সেটি যৌক্তিক। এটি আমরাও মনে করি। তাদেরকেও সামাজিক সুরক্ষাখাতের সঙ্গে যদি যুক্ত করে নেয়া হয়, তাহলে তারাও একটি রেশনিং পেলে তাদের জীবন-জীবিকা নির্বাহ সহজ হবে।

এদিকে, দাবি পূরণ না হলেও একটি শোভন বেতনের দাবি শ্রমিকপক্ষের। তাদের খেয়াল যেন চাপে পড়ে নুইয়ে না পড়ে শিল্প।

এ বিষয়ে পোশাক শিল্পের সর্বনিম্ন মজুরি বোর্ড-২০২৩-এর শ্রমিক প্রতিনিধি সিরাজুল ইসলাম রনি বলেন, ‘হিসাব করে আমাদের মজুরি দিতে হবে। সেটি শিল্পের জন্য যেমন সহায়ক হবে, তেমনি সেই সঙ্গে শ্রমিকের জীবনযাত্রার জন্যও সহায়ক হবে। আমরা চাই অধিক সংখ্যক শ্রমিক লাভবান হোক। আমরা সেই বিষয়টিই গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছি।’

এর আগে, ২০১৮ সালে ১৬ হাজার টাকা দাবির বিপরীতে ৮ হাজার টাকা সর্বনিম্ন বেতন পেয়েছিলেন পোশাক শিল্পের শ্রমিকরা।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন