আশাশুনি প্রতিনিধি:
আশাশুনির প্রতাপন গর ইউনিয়নটি এখন সাগর না সমতল ভূমি তা বোঝার কোন উপায় নেই। এরই মধ্যে উদবাস্ত হয়ে এলাকা ছাড়ছে অসংখ্য পরিবার। গত কয়েক দিন আগে বিদায়ী জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল প্লাবিত এলাকা পরিদর্শন করলেও কবে বাঁধ নির্মানের কাজ হবে তার কোন আশ্বাস দিতে পারেন নি। তবে খুব দ্রুত যাতে বাঁধ নির্মান কাজ হয় সে ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করবেন বলে আস্বস্থ করেন বানভাসী এলাকার মানুষের। এমন খবর প্লাবিত এলাকার মানুষের মাঝে পৌছালে শত শত আশ্রয় হীন মানুষ অন্যকোন উপায় না পেয়ে জেলা শহরের দিকে চলে যাচ্ছে। তবে বানভাসী কিছু মানুষ এখনো নিজ ভিটা ছেড়ে না যেয়ে ঝুকি পূর্ন বেড়িবাঁধের উপর ও নদীতে মাছধরা নৌকার উপর পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করছে।
তথ্য অনুসন্ধানে জানাগেছে বর্তমানে ইউনিয়নটিতে প্রায় ৪০ হাজার মানুষের ভাগ্যে যেনো অমাবস্যার কালো অন্ধকার নেমে এসেছে। ঘুর্নিঝড় আম্ফানের ক্ষত না শুকাতেই আবারো ঘুর্নিঝড় ইয়াস এর প্রভাবে গত ২৬ মে প্রলয়ঙ্কারী ইয়াস এর প্রভাবে জ্বলোচ্ছাস মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধের কয়েকটি পয়ন্টে ওভার ফ্ল হয়ে ও বেড়ীবাঁধ ভেঙ্গে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়। গত এক সপ্তাহ পার হলেও বাঁধ বাঁধার তেমন কোন উদ্যোগ নেই পানি উন্নয়ন বোর্ডের । এ দিকে এলাকাবাসী বলছে স্থানীয় চেয়ারম্যান শেখ জাকির হোসেন সরকারিভাবে কিছু ত্রাণ বানভাসী মানুষের মাঝে পৌছায়ে দিলেও সব মানুষের ভাগ্যে জোটেনি। অথচ বানভাসী মানুষদের একত্র করে ত্রাণ দেওয়ার নাম করে কিছু শুকনা খাবার দিয়ে ছবি তুলে বেসরকারি সংস্থা ও কিছু স্থানীয় নেতা হাইলাইটস হওয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু বাস্তবে অসহায় মানুষের দুঃখ কষ্ট কেউই বুঝতে চায় না। খাবার পানি,রান্না খাওয়া ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা একেবারে নেই বললে চলে।
এমতাবস্থায় বানভাসী মানুষদের খাওয়া দাওয়া একবেলা হলেও অন্যবেলায় জুটছে না। আশাশুনি সদরে প্রতাপনগর বানভাসী এক বয়ো বৃদ্ধার সাথে কথা হলে তিনি বলেন আমরা সপ্তাহ খানেক ধরে চিড়া মুড়ি খেয়ে নিঘুম রাত কাটিয়েছি। সহায় সম্বল ফেলে রেখে বাঁচার তাগিদে এই এলাকায় এসে মানুষের দ্বারে হাত পেতেছি। সবই ছিল কিন্তু বার বার নদী ভাঙ্গনের ফলে আমাদের এলাকার মানুষের পথের ভিক্ষারি বানিয়েছে। সহজে কি বাবা পরের দুয়ারে হাত পাতা যায় বলা মাত্র হাওমাও করে কেদে ফেলে। বাকী আরও কিছু বলতে চেয়ে ছিলো কিন্তু আবেগভুত হয়ে পড়ায় শুনা সম্ভব হয়নি। সব মিলে বানভাসী মানুষ নিরুপায় হয়ে বাঁচার তাগিদে বিভিন্ন এলাকায় আশ্রয় নিচ্ছেন বলে জানাগেছে। অপর দিকে আশাশুনি উপজেলা সদরের মানিকখালী চর গ্রামের শত শত মানুষ পানি বন্ধি হয়ে পড়েছে। তাদের জীবন জীবিকা নির্বাহের একমাত্র উৎস্য ছোট ছোট মাছের ঘের ভেসে গেছে। দিনের পর দিন কাচা ঘরগুলি চোখের সামনে ভেঙ্গে পড়ে যাচ্ছে। তখনই পরিবারের কান্নার আওয়াজ শুনতে পাওয়া যায়। সপ্তাহ খানেক পার হলেও খাওয়া নেই দাওয়া নেই এ অসহায় মানুষগুলি মানবেতর জীবন যাপন করছে।
অথচ উপজেলা প্রশাসনের সামনে এমন ঘটনা ঘটলেও এখনো পর্যন্ত তেমন কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ বানভাসী মানুষের। টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মান করে পানিবন্দি মানুষদের রক্ষা করার দাবী উপজেলা বাসীর।