হোম অর্থ ও বাণিজ্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালক নিয়োগে নতুন নির্দেশনা

বাণিজ্য ডেস্ক:

দেশের ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে সর্বোচ্চ ১৫ জনকে পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেয়া যাবে। এ ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানগুলো বোর্ডে সর্বনিম্ন দুজন স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ দিতে হবে। এসব পরিচালকের বয়স কমপক্ষে ৩০ বছর হতে হবে। পাশাপাশি থাকতে হবে ১০ বছরের পেশাগত অভিজ্ঞতা।

বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগ (ডিএফআইএম) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।

এতে বলা হয়, কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পরিচালক পদে নিয়োগ পেতে হলে অন্যূন ১০ (দশ) বছরের ব্যবস্থাপনা বা ব্যবসায়িক বা পেশাগত অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। কোনো ব্যক্তির বয়স ১৮ (আঠারো) বছর পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত তার কোনো কাজের অভিজ্ঞতা বিবেচনায় নেয়া হবে না।

আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালকদের যোগ্যতা সম্পর্কে আরও বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ফৌজদারি অপরাধে দণ্ডিত হতে পারবেন না কিংবা কোনো জাল-জালিয়াতি, আর্থিক অপরাধ বা অন্য অবৈধ কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না বা জড়িত নন, এমন নিশ্চয়তা থাকতে হবে। তার সম্পর্কে কোনো দেওয়ানি বা ফৌজদারি মামলায় আদালতের রায়ে বিরূপ পর্যবেক্ষণ বা মন্তব্য থাকতে পারবে না; আর্থিক খাতসংশ্লিষ্ট কোনো নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের বিধিমালা, প্রবিধান, নীতিমালা বা নিয়মাচার লঙ্ঘনের কারণে দণ্ডিত হওয়া যাবে না।

নীতিমালায় আরও বলা হয়েছে, আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালক হতে আগ্রহী ব্যক্তি এমন কোনো কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না, যার নিবন্ধন বা লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে বা প্রতিষ্ঠানটি অবসায়িত হয়েছে; তার নিজের কিংবা স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নামে কোনো ব্যাংক, বিমা কোম্পানি বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে নেয়া ঋণের জন্য খেলাপি নন।

এ ছাড়া আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালক হতে গেলে অন্য কোনো ব্যাংক-কোম্পানি, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বিমা কোম্পানি বা তেমন কোম্পানিগুলোর কোনো সাবসিডিয়ারি কোম্পানির পরিচালক বা উপদেষ্টা বা পরামর্শক বা অন্য কোনোভাবে লাভজনক পদে নিয়োজিত থাকা যাবে না। তিনি কোনো কোম্পানির বা কতিপয় কোম্পানির পরিচালক নন, যে কোম্পানি একত্রে উক্ত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মোট শেয়ারের বিপরীতে মোট ভোটের ১৫ শতাংশের অধিক ভোট প্রদানের অধিকারী। এ ছাড়া তনি একই ফাইন্যান্স কোম্পানির নিরীক্ষক, আইন উপদেষ্টা, উপদেষ্টা, পরামর্শক, বেতনভুক্ত কর্মচারী বা অন্য কোনোভাবে লাভজনক পদের দায়িত্বে নিয়োজিত থাকতে পারবেন না।

পরিচালকের যোগ্যতা সম্পর্কে বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালায় আরও বলা হয়েছে, তিনি কোনো সময়ে আদালত কর্তৃক দেউলিয়া ঘোষিত হননি; তিনি ব্যক্তিগতভাবে অথবা তার ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান বা অংশীদারি প্রতিষ্ঠানের জন্য কর খেলাপি হতে পারবেন না।

এ ছাড়া আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কোনো পদে চাকরিরত থাকলে চাকরি অবসায়নের পাঁচ বছর অতিক্রম না হলে সেই ব্যক্তি কোম্পানির পরিচালক হতে পারবেন না। কোনো কোম্পানি কর্তৃক বা ফাইন্যান্স কোম্পানি আইন, ২০২৩-এর আওতায় প্রতিষ্ঠিত কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণগ্রহীতা হিসেবে তালিকাভুক্ত হলে সেই তালিকা থেকে অব্যাহতি পাওয়ার পর পাঁচ বছর না পেরোলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি পরিচালক হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করবেন না।

স্বতন্ত্র পরিচালকদের সম্পর্কে বলা হয়েছে, স্বতন্ত্র পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার ক্ষেত্রে এসব শর্ত ছাড়াও স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগসংক্রান্ত নীতিমালা পরিপালিত হবে বলে পরিপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।

বিকল্প পরিচালক নিয়োগের ক্ষেত্রে ফাইন্যান্স কোম্পানির কোনো পরিচালক বিদেশে অন্যূন ৩ (তিন) মাস মেয়াদে নিরবচ্ছিন্নভাবে অবস্থানের কারণে বিকল্প পরিচালক নিয়োগ দেয়া যাবে। তবে এক্ষেত্রে ফাইন্যান্স কোম্পানির পরিচালক পর্ষদ কোম্পানি আইন, ১৯৯৪ এর ১০১ ধারার বিধান পরিপালন সাপেক্ষে পরিচালকের বিপরীতে কোনো এক বছরে সর্বোচ্চ ১ (এক) বার একাদিক্রমে ৩ (তিন) মাসের জন্য ১ (এক) জন বিকল্প পরিচালক নিযুক্ত করতে পারবে।

এক্ষেত্রে পরিচালক নিয়োগের যোগ্যতা ও উপযুক্ততাসংক্রান্ত বিধানাবলি প্রযোজ্য হবে। বিকল্প পরিচালক নিয়োগের ক্ষেত্রে ফাইন্যান্স কোম্পানিকে মূল পরিচালকের বিদেশ গমন এবং দেশে প্রত্যাবর্তনসংক্রান্ত দালিলিক প্রমাণাদি সংগ্রহ ও সংরক্ষণ নিশ্চিত করতে হবে। এর কোনো ব্যত্যয় হলে প্রধান নির্বাহী কর্তৃক বিষয়টি তাৎক্ষণিক লিখিতভাবে বাংলাদেশ ব্যাংককে অবহিত করতে হবে।

কোনো ব্যক্তি কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি হতে কোনোরূপ ঋণসুবিধা গ্রহণ করলে তিনি ওই ফাইন্যান্স কোম্পানিতে বিকল্প পরিচালক হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্তির জন্য যোগ্য হবেন না। বিকল্প পরিচালক পদে দায়িত্ব পালনকালে বিকল্প পরিচালকের নিজের নামে কিংবা তার স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে কোনোরূপ ঋণসুবিধা প্রদান করা যাবে না, পূর্বে প্রদত্ত ঋণসুবিধার মেয়াদ বা সীমা বৃদ্ধি করা যাবে না কিংবা কোনো সুদ মওকুফ বা সুদারোপ রহিতকরণ সুবিধা দেয়া যাবে না।

এ ছাড়া, আইন, বিধি বা নির্দেশনাবলে ফাইন্যান্স কোম্পানির পরিচালকের জন্য প্রযোজ্য সকল ঋণ নিয়ামাচার কিংবা নিষেধাজ্ঞা বিকল্প পরিচালকের মেয়াদ কালে তার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে। পাশাপাশি একজন পরিচালক নিয়োগে যেসব যোগ্যতা তা বিকল্প পরিচালকের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন